সেরা ১০ টি ব্যবসার আইডিয়া ২০২৪ | Top 10 Business Ideas In Bangladesh 2024
আমাদের অনেকেরই ব্যবসা শুরুর ইচ্ছা রয়েছে তবে সঠিক গাইডলাইন ও আইডিয়া না থাকার জন্য ব্যবসা শুরু করা হয়ে উঠে না। তবে আজকে আমি আপনাদের এই আর্টিকেরে জানাতে চলেছি সেরা ১০ টি ব্যবসার আইডিয়া ২০২৪ সম্পর্কে যার সাহায্যে আপনি একটি ব্যবসা শুরু করার সকল গাইডলাইন পেয়ে যাবেন। তাই যদি আপনার ব্যবসা শুরুর কোনো প্রকারের পরিকল্পনা থেকে থাকে তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য অনেকটাই জরুরী।
সেরা ১০ টি ব্যবসার আইডিয়া ২০২৪
বর্তমানে বাজারের পরিস্থিতি মোটেও সহভাবাপন্ন নয়। প্রতিটি পণ্যেরই মূল্য অনেকটাই বেড়ে যাচ্ছে নিয়মিতভাবে। আর তাই ব্যবসায়ীরা অনেক লাভবান হচ্ছে দিন দিন। তবে কোনো কোনো পণ্যের মূল্য অতিমাত্রায় হ্রাসও পাচ্ছে। তাই না বুঝে ব্যবসা শুরু করলে লস হবে নিশ্চিত। কিন্তু আমি আপনাদের জন্য নিচে ১০ টি সেরা ব্যবসা আইডিয়া শেয়ার করবো যার মাধ্যমে আপনি সহজেই সফল ও লাভবান ব্যবসায়ী হতে পারবেন।
১. টাটকা ফলের ব্যবসা
মানুষের প্রোটিনের চাহিদা পূরণে নিয়মিতভাবে নানা প্রকারের ফলমূল খেতে হয়্ আর এটি যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। মানুষ যতদিন বেচে থাকবে ততদিন ফলমূল খাবে আর তাই আমরা এই টাটকা ফলের ব্যবসাকে তালিকার প্রথমে স্থান দিয়েছি। আপনিও চাইলে অল্প পুজিতে ও সল্প সময়ের মধ্যেই দীর্ঘস্থায়ী এই টাটকা ফলের ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন।
মাত্র ১০,০০০ টাকা হলেই আপনি ফলের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। যেখানে মজুদের উপর ভিত্তি করে ৫০% থেকে ৮০% পর্যআন্ত লাভের আশঙ্খা থাকে। শুরুতে কম টাকাই করলেও পরে আপনি বড় পরিসরে করতে পারেন। সিজিনারি ফলের ব্যবসা সবচেয়ে বেশি লাভবান, যেমন: গ্রীষ্মকালে আম, লিচু, ইত্যাদি। আবার শীতকালে বড়ই, পেয়ারা, ইত্যাদি।
ফলের ব্যবসা সাধারণ আপনাকে যেকোনো নির্দিষ্ট স্থানে করতে হবেনা। যখন যেখানে ইচ্ছা শুরু একটি ভেন গাড়িতে সকল ফল নিয়ে বসে পড়তে পারবেন। আর মানুষকে ভেজালমুক্ত ও ক্যামিক্যাল বিহীন টাটকা সুস্বাদু ফল দিতে পারলে সকলেই আপনার কাছ থেকেই নিয়মিত ফলমূল কিনবে। তাই অবশ্যই আপনাকে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে টাটকা ফল এনে তারপরে বাজারে বিক্রি করতে হবে।
২. ধান ও গম স্টক
আপনি হয়তে দেখেছেন আপনার এলাকার অনেকেই ধানের ও চাউলের দোকান করে থাকে। তারা কিন্তু সব জাতের চাউল সব সময় বিক্রি করে না। একমাত্র যখন যেটার দাম বাজারে চড়া থাকে তখনই তারা সেই চাউল বাজারে বিক্রি করে। আপনিও চাইলে প্রথমত কৃষকের কাছ থেকে কম দামে চাউল, গম, ধান কিনে তা গোডাউনে মজুদ করতে পারেন। এবং পরে বাজারে মূল্য যখন বেড়ে যাবে তখন তা বিক্রি করতে পারেন।
এই ব্যবসা শুরু করতে আপনার পূর্বেই একটি গোডাউন প্রস্তুত করতে হবে। সেই গোডাউনে অবশ্যই মিনিমাম ৫ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকার ধান ও গম কিনে রাখতে হবে। আর কিছুদিন পরে যখন মূল্য বেড়ে যাবে তখন খুরচা বা পাইকারি দরে বাজারে বিক্রি করতে হবে। এই ব্যবসায় লাভের পরিমাণ ২০% থেকে শুরু করে ৫০% পর্যন্ত। সাধারণত ১ মাস থেকে ৫ মাস অবধি মজুদের প্রয়োজন হতে পারে।
ধান ও গম মজুদ/স্টকের ব্যবসা একক বা যৌথভাবে করতে পারেন। তবে বাজেট বেশি থাকলে আবশ্যই একা করার চেষ্টা করুন এতে লাভের অংশ বেশি থাকবে। তবে পরিচালনা সঠিকভাবে না করতে পারলে আপনি একজন পার্টনার বাছাই করতে পারেন।
৩. ফুডকার্ট ব্যবসা
এখন শহর থেকে শুরু করে গ্রামে পর্যন্ত ফুডকার্ট এর দেখা মিলছে। অনেক তরুন উদ্যোক্তা মূলত ফুডকার্ট ব্যবসা শুরু করছে। এই ব্যবসাতে মূলত আপনার পণ্য হলো চাইনিস খাবার যা অত্যন্ত লোভনীয়। আর বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষই খেতে পছন্দ করে। তাই ফুডকার্ট ব্যবসায় লসের সম্ভাবনা অনেকটাই কম অন্যান্য ব্যবসার তুলনাই।
তবে ফুডকার্ট ব্যবসা শুরুর পূর্বে আপনাকে ভালোভাবে চাইনিস ফুড তৈরি করা জানতে হবে। বর্তমান সময়ে ইউটিউবে এর মাধ্যমে চাইনিজ বিভিন্ন খাবারের রেসিপি আপনি সহজেই শিখে নিতে পারবেন। যার ফলে ফুড কার্ট বিজনেস করতে আপনার কোন ধরনের অসুবিধা হবে না। তাছাড়া এই ব্যবসায় লসের সম্ভাবনা একদমই নেই। কারণ বাংলাদেশের সকল মানুষ খেতে খুবই পছন্দ করে। আর যারা খেতে পছন্দ করে তারা নিয়মিত নতুন নতুন খাবারের সন্ধানে লেগে পড়ে। তাই আপনি যদি নতুন নতুন চাইনিজ ফুড গুলো আপনার নিজস্ব এলাকায় ফুড কার্ড এর মাধ্যমে ব্যবস্থা শুরু করেন তাহলে আপনার ব্যবসা শতভাগ নিশ্চিত সফল হবে।
ফুডকার্ট ব্যবসা করতে মোটামুটি ২০,০০০ টাকা বাজেট হলেই চলবে। শুধুমাত্র একটি ফুড কার্ট ক্রয় করতে হবে এবং তারপর নিয়মিত বিভিন্ন মসলা, মাংস এবং আরো উপাদান গুলো ক্রয় করতে হবে। যে অর্থগুলো মূলত আসবে আপনার ব্যবসা থেকে অর্থাৎ আপনাকে নিজস্ব ইনভেসমেন্ট শুধুমাত্র প্রথমবার করতে হবে। যেহেতু আপনি রাস্তার পাশে দোকান দিবেন তাই নিশ্চিত থাকুন আপনি নিয়মিত ভালো একটি সেল জেনারেট করতে পারবেন।
তবে আমি আপনাকে পরামর্শ দিব আপনি চেষ্টা করুন এমন একটি জায়গায় আপনার ফুডকার্ট দেওয়ার যেখানে মূলত স্কুল কলেজ রয়েছে। কারণ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাই সবচেয়ে বেশি খাওয়া-দাওয়া করতে পছন্দ করে। তাছাড়া বাজারের পাশে, কিংবা লোকালয়ের পাশে এ ধরনের প্রকল্প গুলো দিলে সহজেই বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।
৪. নার্সারি ব্যবসা
বাংলাদেশের মানুষ জন অনেক বেশি সৌখিন। অনেকেই নিজের বাড়ির ছাদে নার্সারি করতে পছন্দ করে। বিভিন্ন ধরনের ফুলের বাগান এবং বিভিন্ন ধরনের নানা রকমের ফলের বাগান দিতে অনেকেই অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আর এই সুযোগে বিভিন্ন নার্সারি ব্যবসায়ীরা অনেক বেশি অর্থ উপার্জন করে। তাছাড়া নার্সারি ব্যবসা শুরু করতে খুবই কম অর্থ ব্যয় করতে হয়।
কারণ একবার যদি আপনি একটি চারা নিজে নিজে তৈরি করতে পারেন তাহলে আপনি হাজার হাজার চারা মাথার বিগ কফি তৈরি করে বাজারে বিক্রি করতে পারবেন। কিছুদিন আগে যেমন ড্রাগন ফলের চাড়া বিক্রি হতো দুই থেকে তিন হাজার টাকায়। তবে বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ বলতে গেলে একরকম ফ্রিতেই পাওয়া যাচ্ছে। কারণ মানুষ এটি নিয়ে এতটাই মেতে উঠেছে যে অসংখ্য বাগান এবং অসংখ্য নতুন নতুন উদ্যোক্তা ড্রাগনের চাষ শুরু করেছে।
একইভাবে আপনি যদি নতুন কোন ফলের চারা নিয়ে, কিংবা ফুলের চারা নিয়ে নার্সারি তৈরি করতে পারেন আপনার ব্যবসার শতভাগ নিশ্চিত সফল হবে। এইজন্য অবশ্যই আপনার শুধুমাত্র একটি ভালো জুনেই মাথায় করতে হবে এবং সেই জমিতে নিয়মিতভাবে আপনাকে পরিচর্যা করতে হবে।
পরিচর্যা করার জন্য চাইলে আপনি কোন লোক রেখে দিতে পারেন কিংবা নিজে নিজেই পরিচর্যা করতে পারেন। সর্বপরিষরে নার্সারি ব্যবসা করতে চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। তবে বৃহৎ পরিসরে নার্সারি ব্যবসা করতে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
মূলধন যত বেশি থাকবে ততটাই বেশি মুনাফার আশঙ্কা করা যাবে নার্সারি ব্যবস্থা থেকে। কারণ মানুষ যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন পর্যন্ত মানুষ গাছ লাগাবে। আর যেহেতু এখন বাসা বাড়ির সংখ্যা অনেক বেশি তাই ছাদে মানুষ গাছ লাগাতে খুবই পছন্দ করে। দেশের সৌখিন মানুষের অভাব নেই তাই নিশ্চিত নার্সারি ব্যবস্থা কখনোই বন্ধ হবে না।
৫. অনলাইন টি-শার্টের ব্যবসা
গরমের সময় কিংবা ঠান্ডার সময় মোটা জামার নিচে আমরা অধিকাংশ ছেলেরাই t-shirt পরিধান করি। যার ফলে টি-শার্টের ব্যবসা প্রায় যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। আপনিও চাইলে টি-শার্টের ব্যবসা শুরু করতে পারেন অনলাইনে একটি ওয়েবসাইট কিংবা ফেসবুকে পেজ তৈরি করে। বর্তমান সময়ের খুবই স্বল্পমূল্যে ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। সর্বমূল্যে ওয়েবসাইট তৈরি করার মাধ্যমে আপনি একটি টি-শার্টের ব্যবসা শুরু করতে পারেন এবং অনলাইনে টি-শার্টগুলো বিক্রি করতে পারেন।
যেহেতু দেশে এখন অসংখ্য কুরিয়ার সার্ভিস রয়েছে এবং খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মানুষের ঘরের দুয়ারের সামনে কুরিয়ার সার্ভিসের পণ্যগুলো পৌঁছে যায় তাই আপনিও অনলাইনে টি-শার্টের ব্যবসা নির্দ্বিধায় চালিয়ে যেতে পারেন। তবে তার জন্য অবশ্যই ভালো মানের টি শার্ট ডিজাইন এবং সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ এবং পর্যবেক্ষণ করে তা প্রিন্টিং করতে হবে।
এরপরে গ্রাহকদের নিকট পৌঁছানোর জন্য যুগোপযোগী করে তুলতে হবে। এইসব মিলিয়ে প্রতি টি-শার্টে আপনার সর্বোচ্চ ১০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। এবং প্রতিটি কিশোরকে আপনি মিনিমাম ৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত লাভ করতে পারেন। যে ধরনের কোয়ালিটির টি-শার্ট বানাবেন সেই ধরনের কোয়ালিটি অনুযায়ী লাভ হবে।
আপনি চাইলে বিভিন্ন কোম্পানি টি শার্ট গুলো কপি করে কিংবা বড় বড় ব্যক্তিদের বিভিন্ন বাণী দিয়ে বিভিন্ন ধরনের টি শার্ট প্রিন্ট করে সেগুলো বাজারে লঞ্চ করে বিক্রি করতে পারেন। অলরেডি মার্কেটে রয়েছে সেই টি-শার্টগুলো কম দামে ক্রয় করে তা অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করে সামান্যমুলা পাওয়া অর্জন করতে পারেন। বর্তমান সময়ে অনলাইন টি শার্ট বিক্রি যারা করছে তারা অধিকাংশই বাজার থেকে অলরেডি তৈরি করার রয়েছে এই ধরনের টি শার্ট গুলো কিনে তা অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করছে।
এতে করে তাদের প্রিন্টিং এবং আরো অন্যান্য ঝামেলা গুলো সহ্য করতে হচ্ছে না। সহজেই তারা রেডিমেট টি-শার্ট বাজার থেকে ক্রয় করে গ্রাহকের নিকট পৌঁছে দেওয়ার জন্য উপযোগী করে তুলছে। এই ধরনের ব্যবসা করতে চাইলে আপনার খুবই কম খরচ হবে আপনি শুধুমাত্র গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী টি-শার্ট বাজার থেকে ক্রয় করে সহজেই গ্রাহকের নিকট পৌঁছে দিয়ে মুনাফা অর্জন করতে পারেন।
৬. কম্পিউটার সার্ভিসিং সেন্টার ব্যবসা
কমবেশি সকলের কাছেই এখন বর্তমানে কম্পিউটার রয়েছে। আর কম্পিউটারের নতুন নতুন আপডেট কিংবা সমস্যার নিত্যদিনের একটি বিষয়। মাঝে মাঝে কম্পিউটারের হার্ডলিক্সের সমস্যা হয় আবার মাঝে মাঝে সমস্যা হয় র্যাম মেমোরিতে। এই ধরনের ছোটখাটো সমস্যা গুলো ছাড়িয়ে তোলার জন্য যেকোনো কম্পিউটার ব্যবহারকারীকে একটি সার্ভিসিং সেন্টারে যেতে হয়।
আপনি চাইলে আপনার নিজ এলাকায় একটি কম্পিউটার সার্ভিসিং সেন্টারের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এই ধরনের ব্যবসা শুরু করতে আপনাকে শুধু একটি দোকান ভাড়া নিতে হবে এবং তার আগে অবশ্যই কম্পিউটার সার্ভিসিং এর সকল ধরনের জ্ঞান থাকতে হবে। কম্পিউটারের খুঁটিনাটি থেকে শুরু করে একদম বড় পর্যায়ের সকল সমস্যা গুলোর সমাধান করতে পারলেই একমাত্র আপনি কম্পিউটার সার্ভিসিং সেন্টার দিয়ে একজন লাভবান ব্যবসায়ী হতে পারেন।
বাংলাদেশে বর্তমানে অসংখ্য বেকার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার রয়েছে। আপনি চাইলে এই সকল ইঞ্জিনিয়ারদেরকে মেসি ভিত্তিতে বেতন দিয়ে নিজের দোকানে চাকরি দিতে পারেন এবং একটি সার্ভিসিং সেন্টার তৈরি করতে পারেন। এতে করে আপনাকে নিজেকে কোন ধরনের কাজ করতে হচ্ছে না শুধুমাত্র বসে থেকে মুনাফা গুনতে হচ্ছে।
৭. অনলাইন ফুড ডেরিবারি ব্যবসা
অনলাইনে মানুষ এখন অত্যন্ত বেশি একটিভ। সর্বদাই বাংলাদেশের মানুষ বিভিন্ন কাজে নিত্য প্রয়োজনে অনলাইনের ব্যবহার করে থাকে। কিছুদিন আগে যখন ৭ দিনের জন্য দেশে ইন্টারনেট বন্ধ ছিল তখন মানুষ আন্দাজ করতে পেরেছে বিনা ইন্টারনেটে চলাচেরা করা কতটা কঠিন। তাই এটা নিশ্চিত অনলাইন ধীরে ধীরে আপডেট হবে এবং মানুষ অবশ্যই অনলাইন ব্যবহার কখনোই বন্ধ করবে না।
তাই আপনি যদি অনলাইন ফুড ডেলিভারি ব্যবসা শুরু করেন সে ক্ষেত্রে লস হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম। আপনাকে কিছুই করতে হবে না শুধু একটি অনলাইনে ওয়েবসাইট কিংবা ফেসবুক পেজ তৈরি করতে হবে। এরপরে আপনার এলাকায় বিভিন্ন ধরনের নামিদামি বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের ফুডগুলো আপনার ওয়েবসাইটে লিস্ট করতে হবে এবং তারপরে যখন গ্রাহক সেটি অর্ডার করবে তখন সেখানে নির্দিষ্ট কমিশন রেখে তাদের নিকট তা পৌঁছে দেবেন।
আপনাকে নিজেকে সেই খাবার পৌঁছে দিতে হবে না। এর জন্য আপনি ডেলিভারি বয় রেখে দিবেন যাকে আপনি প্রতিটি ডেলিভারির জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন দিবেন। সাধারণত ফুড পান্ডা থেকে আপনি ইন্সপিরেশন নিতে পারেন। যারা কিনা বাংলাদেশের ব্যবসা শুরু করার পরে অত্যন্ত লসের মুখে পড়লেও বর্তমান সময় দেশের অন্যতম একটি ফুড ডেলিভারি সার্ভিসিং কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। অনলাইনে ফুড ডেলিভারি সার্ভিস দিয়ে কখনোই লসের মধ্যে আপনাকে পড়তে হবে না। এবং এটাও নিশ্চিত থাকেন যে আপনি কোটিপতি হবেন খুবই সহজে যদি আপনি আপনার ব্যবসাটিকে টিকিয়ে রাখতে পারেন।
৮. ফ্রিলান্সিং অফিস
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের মানুষ সকলেই জানে ফ্রিল্যান্সিং কতটা জরুরি হয়ে উঠেছে। ফ্রিল্যান্সিং করার মাধ্যমে হাজারো যুবক নিজেদের বেকারত্ব দূর করতে পেরেছে। তবে এখনো অনেকেই রয়েছে যারা ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে ক্ষতিকভাবে জানেনা। আপনি চাইলে তাদের জন্য একটি ফ্রিল্যান্সিং অফিস দিতে পারেন তাদেরকে ট্রেনিং করাতে পারেন। তার বিনিময়ে আপনি কোর্স ফি নিতে পারবেন।
এরপরে তাদেরকে আপনি বিভিন্ন ধরনের মার্কেটপ্লেস থেকে কাজ নিয়ে এসে দিবেন এবং তার বিনিময়ে আপনি কমিশন পাবেন। ধরুন ১০০ ডলারের একটি কাজ সেখানে ৬০% মানে ৬০ ডলার আপনার এবং ৪০% অর্থাৎ ৪০ ডলার সেই ব্যক্তির যে কাজটি কমপ্লিট করে দিল। এতে করে আপনি বসে বসে ডলার উপার্জন করতে পারবেন শুধুমাত্র একটি ফ্রিল্যান্সিং অফিস দিয়ে।
এই ধরনের অফিস দিতে আপনাকে শুধু ১০ থেকে ১২ টি কম্পিউটার কিনতে হবে এবং একজন ভালো ফ্রিল্যান্সিং মেন্টরকে হায়ার করতে হবে। এছাড়া যদি আপনার নিজস্ব বাসা বাড়িতে এমন অফিস দেন সেক্ষেত্রে কোন রুম ভাড়া দিতে হবে না তবে কোন এপার্টমেন্ট ভাড়া নিলে সেক্ষেত্রে আপনাকে মাসে 20 থেকে 30 হাজার টাকা ভাড়া প্রদান করতে হবে।
যদি গ্রামের দিকে এই কাজটি করেন সেক্ষেত্রে আপনি লাভের পরিমাণ বেশি পাবেন। কারণ গ্রামের দিকে হয়তো বা অনেকেই এখনো পর্যন্ত ফ্রিল্যান্সিংয়ের যেই দক্ষতা স্কিলগুলো রয়েছে সেগুলো অর্জন করতে পারেনি। যার ফলে আপনার কাছ থেকে বা আপনার ইনস্টিটিউট এর কাছ থেকে তারা সেই স্কিলগুলো অর্জন করার জন্য আপনার কাছে কোর্স করবে এবং আপনি এখান থেকে উপার্জন করতে পারবেন। তাছাড়া যখন আপনি মার্কেটপ্লেস থেকে কাজ দিবেন সে ক্ষেত্রেও আপনি সেখান থেকেও ৬০ পার্সেন্ট ইনকাম করতে পারবেন।
৯. ইউটিউবিং
বর্তমান সময়ে youtube এর মধ্যে আপনি হয়তোবা একটি ভিডিও দেখছেন। সেই ভিডিওটি আপনি যদি নিজে তৈরি করতেন তাহলে কেমন হতো? আসলে আমরা নিজেরা কোন কাজ না করে শুধু মানুষের কাজকে ছোট মনে করি। কিন্তু আপনি চিন্তা করুন একটি ইউটিউব আর মাসে যা ইনকাম করছে তা আপনি হয়তো দুই থেকে চার মাসেও ইনকাম করতে পারেন না।
কারণ ইউটিউবে বর্তমান সময়ের শুধুমাত্র বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ইনকাম হয় না। ইউটিউবে বর্তমানে স্পন্সার শিপ এবং ব্র্যান্ড প্রমোশন করেও বড় বড় ইউটিউবার কোটি কোটি টাকা ইনকাম করছে। আর যারা সল্প পরিসরে ইউটিউবিং করে তারাও মাসে ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা ইনকাম করছে।
এমন একটি মার্কেটপ্লেস যেখান থেকে অর্থ উপার্জন করতে সকলেই ব্যস্ত। এখন জন্মের পর থেকে কিছু কিছু শিশুর ইউটিউবার হওয়ার জন্য পরিকল্পনা করে। তবে আপনিও চাইলে একজন ইউটিউবার হতে পারবেন। কিন্তু তার জন্য অবশ্যই আপনাকে একটি টিম ম্যানেজমেন্ট করে একটি পক্ষ টিম তৈরি করতে হবে। যদি আপনার দক্ষ টিম থাকে তাহলে আপনি নিয়মিত একটি ভিডিও দিতে পারবেন এবং এতে করে দ্রুত আপনি সাকসেস পেতে পারেন।
আপনি একটি কাজ করতে পারেন আপনার চ্যানেলের ভিডিও এডিট এর জন্য একজন, ক্যামেরাম্যান একজন, থাম্বনেইল তৈরির জন্য একজন, আর এক্টিং করার জন্য বেশ কয়েকজন। এভাবে যদি আপনি কয়েকজন বন্ধু মিলে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে পারেন সেক্ষেত্রে দ্রুত সময়ের মধ্যে আপনারা সফলতা পাবেন। এমনকি আপনার যদি জনপ্রিয়তা বেশি হয় সে ক্ষেত্রে আপনি ইউটিউব এর মাধ্যমে একজন সেলিব্রেটি হয়ে উঠতে পারবেন।
লক্ষ্য করলে দেখতে পারবেন বর্তমান সময়ে ইউটিউবে করে অনেকেই বড় বড় সেলিব্রেটি হয়ে উঠেছে। আগে একটি সময় ছিল যখন ইউটিউবের মধ্যে শুধুমাত্র মানুষ বিভিন্ন কিছু জানার জন্য ভিডিও দেখতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে ইউটিউব ব্যবহার করে নিজেদেরকে সেলিব্রেটিতে পরিণত করেছে বেশ কিছু ইউটিউবার। আমাদের দেশের রাফসান দ্যা ছোট ভাই, আয়মান সাদিক এ ধরনের আরও বিভিন্ন ধরনের কন্টেন্ট ক্রিয়েটর রয়েছে যারা নিজেদেরকে সেলিব্রিটি করে ফেলেছে শুধু ইউটিউবের মাধ্যমে। তাই আর দেরি না করে এখনই বন্ধুদের নিয়ে শুরু করে ফেলুন একটি ইউটিউব চ্যানেল এবং সফলতার মুখ আপনিও দেখতে পারবেন।
১০. ফার্মেসি ব্যবসা
আমাদের নিয়মিত বিভিন্ন ঔষধ সেবন করতে হয়। আর যারা বৃদ্ধ রয়েছে তারা তো প্রতিদিন প্রায় অসংখ্য ওষুধ সেবন করে। আমার নিজের বাড়ির কথা যদি বলি সে ক্ষেত্রে আমি দেখেছি আমার বাসায় যারা বৃদ্ধ রয়েছে তারা নিয়মিত প্রায় পাশে থেকে দশটি ঔষধ তিন বেলা সেবন করে। আর এই সকল ওষুধ গুলো তারা ক্রয় করে ফার্মেসি থেকে। আরেকটি ফার্মেসির দোকানদার দৈনিক অনেক বেশি অর্থ উপার্জন করে শুধুমাত্র ওষুধ কেনাবেচার মাধ্যমে।
সাধারণত ফার্মেসির দোকানদাররা কোম্পানি থেকে সরাসরি ওষুধ ক্রয় করে আর সেই ওষুধগুলো বিক্রয় করেন সাধারণ মানুষের কাছে। এভাবে তারা নিয়মিতভাবে অর্থ উপার্জন করছেন। একদম গ্রামের দিকে যে সকল ফার্মেসির দোকান রয়েছে সেই দোকানগুলোতেও প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা মিনিমাম ইনকাম হয়। আর এই ব্যবসা করতে শুধুমাত্র এক থেকে দুই লক্ষ টাকা ক্যাশ নিয়ে আপনাকে নামতে হবে। মাত্র এক লক্ষ থেকে দুই লক্ষ টাকার ওষুধ ক্রয় করে আপনার দোকানে তুললে খুবই সহজে আপনি ফার্মেসির ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
তবে ফার্মেসীর ব্যবসা শুরু করার পূর্বে আপনাকে অবশ্যই বেশ কিছু জ্ঞান অর্জন করতে হবে। কোন রোগের জন্য কোন ঔষধ দরকার সেই বিষয়গুলো জানার জন্য আপনাকে প্রথমে হাতুড়ি ডাক্তার হতে হবে। এর জন্য আপনাকে একটি সার্টিফিকেট নিতে হবে এবং তারপরে আপনি একটি ফার্মেসির দোকান দিতে পারবেন। এই কাজগুলো শেষ করতে আপনাকে ছয় মাসের একটি কোর্স করতে হবে সবকিছু মোটামুটি শেষ করতে প্রায় ছয় থেকে সাত মাস সময় লাগবে। তারপরেই আপনি একটি ফার্মেসীর দোকান দিয়ে উপার্জন করে নিতে পারবেন লক্ষ লক্ষ অর্থ।
কোন ব্যবসায় লাভ বেশি
ব্যবসার লাভ ও ক্ষতি নির্ভশীল কাস্টমারের চাহিদার উপরে। আপনি যদি এমন পণ্য নিয়ে ব্যবসা করেন যে পণ্যের কোনো প্রকার চাহিদা নেই তাহলে সেই ব্যবসাটি ফেইল বা লোকশানের হার ৯৯ শতাংশ। তবে আপনি যদি এমন একটি ব্যবসা করেন যেখানে লাভ কম থাকলেও চাহিদা অনেক বেশি তাহলে লাভ এর সম্ভবনা অনেক অংশেই বেশি থাকে। তাই চেষ্টা করুন বর্তমানে মানুষের যে পণ্যটি অনেক জরুরি সেটি নিয়ে ব্যবসা করার।
কোন ব্যবসাটি আপনার জন্য
আমরা উপরে যেসকল সেরা ১০ টি ব্যবসার আইডিয়া সম্বন্ধে জানিয়েছি তা হয়তো আপনারা দেখেছেন। কিন্তু এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না যে কোন ব্যবসাটি শুরু করবেন। এটা নির্ভর করবে সম্পূর্ণ আপনার মূলধন ও আপনার ইচ্ছার উপর। আপনার যে কাজটি ভালো লাগে ছিক সে কাজটি করলে সহজেই সফলতা পাওয়া সম্ভব তাই চেষ্টা করুন আপনার যে ব্যবসাটি পছঁন্দ হচ্ছে ও সহজে করতে পারবেন বলে মনে হচ্ছে সেটি শুরু করুন। যেমন ধরুন আপনার ইউটিউবিং করতে ও নতুন নতুন ভিডিও বানাতে ভালো লাগে তাহলে ইউটিউবিং শুরু করুন। কে কি বলছে সে দিকে খেয়াল করবে না।
আমাদের শেষ কথা
আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি জেনে গেছেন যে সেরা ১০ টি ব্যবসার আইডিয়া ২০২৪ কোনগুলি। আর এই ব্যবসাগুলোর মধ্যে আপনার কাছে কোন ব্যবসাটি ভালো লেগেছে ও আপনি কোন ব্যবসা শুরু করবেন তা অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন। আর এনবাংলাব্লগ ভিজিট করুন এই ধরণের বিভিন্ন ব্যবসায়ীক আইডিয়া পেতে ও সফল উদ্যোক্তা হতে।