কুরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত
কুরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত: কুরবানীর গুরুত্ব কতটুকু তা একজন মুমিন ব্যক্তিই জানে। কুরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত সম্বন্ধে জেনে রাখা আমাদের জন্য খুবই জরুরী। বর্তমানে এই আখেরি জামানায় আমাদের অবশ্যই কুরবানী দেওয়া নিয়ে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। যাদের টাকা-পয়সা রয়েছে এবং সামর্থ্য রয়েছে কুরবানী দেওয়ার মতো তারা অবশ্যই কুরবানী দিবেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এ বিষয়ে আদেশ করেছেন।
আমাদের মহানবী যেখানে আদেশ করেছেন সেই জায়গায় যদি আমরা সেই আদেশ পালন না করি তাহলে নিশ্চয়ই গুনাহ হবে। এছাড়া কুরবানীর ইতিহাস এতটাই কষ্টকর যা আমরা অনেকেই জানি। হযরত ইব্রাহিম আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নিজের পুত্র সন্তানকে কুরবানী করতে প্রস্তুত ছিল আর এই বিষয়টি আল্লাহতালা দেখার পরে তিনি আমাদের এখন পর্যন্ত এমনকি আখেরি জামানা পর্যন্ত যতদিন দুনিয়া রয়েছে ততদিন পর্যন্ত কুরবানী করার জন্য আদেশ করেছেন।
তাহলে বুঝতেই পারছেন কুরবানী করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। কুরবানীর মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছে প্রিয় বান্দা হয়ে উঠতে পারি। কেননা কুরবানী এমন একটা বিষয় যেখানে আমাদের নিজের তাকওয়াকে, ঈমানকে আল্লাহতালার প্রতি বিসর্জন দিতে হয়। নিজের সবচেয়ে প্রিয় জিনিসটা আল্লাহ তালার উদ্দেশ্যে কুরবানী করতে হয়।
এখানে কুরবানির মাংস কিংবা অন্য কোন জিনিস আল্লাহ তায়ালার কাছে পৌঁছাবে না বটে কিন্তু নিশ্চয়ই আপনার তাকওয়া মহান আল্লাহতায়ালার নিকট পৌঁছাবে। আপনি আল্লাহর উদ্দেশ্যে কোরবানি দিচ্ছেন নাকি শুধুমাত্র গোস্ত ভক্ষণ করার জন্য কুরবানী দিচ্ছেন তা আল্লাহ অবশ্যই খুব ভালো করেই জানেন। তাই অবশ্যই আপনারা চেষ্টা করবেন আল্লাহতালাকে সন্তুষ্ট করার জন্য কুরবানী দেওয়ার যদি আপনার সামর্থ্য থাকে।
কিন্তু যাদের সামর্থ্য নেই তারা কি করবে? কুরবানির গুরুত্ব কতটুকু তা আমরা অনেকেই বুঝতে পারছি। কুরবানী আমাদের জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। প্রত্যেক বছর মাত্র একবার কোরবানি দিতে হয় এমনটা নয় যে প্রতিমাসে একবার। তাই কুরবানিতে এমন একটি পশু কুরবানী দেওয়া উচিত যা আমাদের জীবনের একটি ইনকামের অংশ হবে। এতে করে সেটি অবশ্যই আমাদের প্রিয় বস্তু হবে।
এবং চেষ্টা করবেন কুরবানী দেওয়ার পূর্বে সেই পশুটিকে ভালোভাবে লালন পালন করানোর তাকে ভালোভাবে খাওয়ানোর। এতে করে এই পশুর উপর আপনার একটি মায়া সৃষ্টি হবে। ঠিক একই মায়া যেই মায়া ছিল হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম এর হযরত ইসমাইল আলাই সাল্লাম এর উপর। অর্থাৎ সেই কুরবানীর পশু যেন হয় ইসমাইল আঃ এবং আপনি যেন হন ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম। সেজন্য বন্ধুরা অবশ্যই কুরবানীর পশুটির উপর মায়া থাকলে আমাদের কুরবানীর পশুটি কুরবানী দিতে ইচ্ছে করবে না। (কুরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত)
কিন্তু আপনি উত্তম ব্যক্তি যদি সে সময় সেই পশুটিকে কুরবানী দেন যে সময় আপনার মায়া জেগেছে সেই প্রশ্নটির উপর যেই প্রশ্নটি আপনি কোরবানি দিচ্ছেন। কথাটুকু যদি বুঝে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই আপনি বুঝতে পারবেন কুরবানী কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
যদি কোন ব্যক্তির সামর্থ্য থাকে এবং কুরবানী না দেয় তাহলে নিশ্চয়ই সেই ব্যক্তি ধ্বংস হোক। কারণ কুরবানী দেওয়ার মাধ্যমে ধনী গরিবদের মধ্যে একটি বন্ধন সৃষ্টি হচ্ছে। কারণ যেদিন কুরবানী দেওয়া হয় সেদিন গরিবেরা ধনীদের বাড়িতে মাংস নিতে আসে। এর ফলে গরিবদের মাঝে ধনীরা মাংস বিতরণ করে।
এবং অবশ্যই বলা রয়েছে কুরবানির মাংস শুধু নিজে খাওয়া নয় বরঞ্চ নিজের পরিবার পরিজন এবং পাড়া-প্রতিবেশী এবং গরীব দুঃস্থদের মাধ্যমে বিতরণ করতে। সেজন্য অবশ্যই আপনার কুরবানির মাংস টিকে একটি নির্দিষ্ট ভাগে ভাগ করুন এবং তারপর তা বন্টন করে দিন সকলের মাঝে যাতে খুশি সবার মধ্যে থাকে শুধু আপনার মধ্যেই কিংবা আত্মীয়স্বজনের মধ্যেই নয় বরঞ্চ সকলের মধ্যে খুশি যেন থাকে। (কুরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত)
আর মুসলমান বন্ধুরা আপনারা চেষ্টা করুন এমন একটি পশু কুরবানী দেওয়ার যা আপনার সামর্থের মধ্যে পড়ে। অর্থাৎ মানুষকে দেখানোর জন্য তিন লক্ষ 5 লক্ষ টাকার কুরবানী কেনার কোন প্রয়োজন নেই। যদি আপনার সামর্থ্য থাকে তাহলে ১০ লক্ষ টাকার কুরবানী কিনুন কিন্তু এলাকায় সেই কুরবানীর গরু নিয়ে ঘুরে বেড়ানো কিংবা মালা দিয়ে সাজিয়ে সেটিকে প্রদর্শনী হিসেবে দাঁড় করিয়ে রাখানো এগুলো অবশ্যই কোনমতেই জায়েজ নয়। (কুরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত)
তাছাড়া শুধুমাত্র কুরবানী গরু দিয়েই করতে হবে সে বিষয়টি কোন জায়গাতে উল্লেখ করা নেই। আপনি চাইলে দুম্বা দিয়ে করতে পারবেন আবার চাইলে আরো বেশ কিছু পশু রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে কুরবানী করা জায়েজ রয়েছে। তাই সঠিকভাবে কুরআন এবং সুন্নাহকে পালন করুন এবং নিজের জীবনে সুখী হয়ে যান এবং আখিরাতের জন্য কিছুটা হলেও অর্জন করুন। আশা করছি আপনি পুরো বিষয়টুকু বুঝতে পেরেছেন এবং কুরবানী দিতে আগ্রহী হবেন। (কুরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত)