কুরবানির মাংস বন্টনের হাদিস | কোরবানির গরুর ভাগের নিয়ম
সামনে যেহেতু কোরবানি আসছে তাই আমাদের সকলকেই কুরবানির মাংস বন্টনের হাদিস জানতে হবে যাতে করে সঠিকভাবে কুরবানীর গোশত বন্টন করা যায়। কেননা আপনি যদি কুরবানী দেন এবং সঠিকভাবে কোরবানির মাংস বন্টন না করেন সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার কোরবানি কবুল করা হবে না। তাই কুরবানির মাংস কিভাবে বন্টন করতে হয় তা জানা আপনার এবং আমার প্রত্যেকের দায়িত্ব এবং কর্তব্য। তাহলে চলুন আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা এ বিষয়ে সম্পর্কে জানিয়ে দিব।
কুরবানির মাংস বন্টনের হাদিস
কুরবানীর গোশত বন্টন নিয়ে আল্লাহ তায়ালা জানিয়েছেন যে, এই কুরবানীর গোশত ৩ ভাগ করতে হবে। একাংশ নিজে খাওয়ার জন্য এবং বাকি দুই অংশ আত্মীয় স্বজন এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে বন্টন করে দেওয়ার জন্য। মূলত কুরবানী দেওয়া হয় আল্লাহতালাকে সন্তুষ্ট করার জন্য। কুরবানির কোন প্রকার মাংস কিংবা অন্য কোন কিছুই আল্লাহর নিকট যাবে না। একমাত্র তাকওয়া এবং আপনার মনে আল্লাহ তায়ালার জন্য কতটুকু ভালবাসা রয়েছে এবং আল্লাহ তাআলার জন্য আপনি কতটুকু উজার করে দিতে পারেন সেটি বুঝা যাবে।
কারণ হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য নিজের সন্তানকেও কুরবানী দিতে প্রস্তুত ছিল। ঠিক তেমনি আমরাও কি পারবো একই কাজ করতে? অধিকাংশ মানুষই জীবনেও নিজের সন্তানকে কুরবানী দিতে পারবে না। তাই চেষ্টা করুন কুরবানী যেন ইসলামিক নিয়ম অনুযায়ী হয় কোন ধরনের ভুল নিয়ম অনুসারে নয়।
কুরবানির মাংস কিভাবে বন্টন করতে হয়?
কোরবানির মাংস মূলত আপনার পাড়া-প্রতিবেশী থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি মানুষকে বিতরণ করতে হবে তবে অবশ্যই নিজের জন্য কিছু অংশ রেখে দিতে পারেন। তাছাড়া রাসূল সাঃ মূলত কুরবানীর দিনে অন্য কোন কিছু খেতেন না সরাসরি তিনি নামাজ পড়তে যেতেন এবং ঈদের সালাত শেষ করে তিনি কুরবানী দেওয়ার পরে সেই কুরবানীর পশুর মাংস দিয়ে সেই দিনের প্রথম খাবার খেতেন।
তাই আমরা অবশ্যই এর থেকে বুঝতে পারছি কুরবানীর মাংস নিজে খাওয়া যাবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে কুরবানী শুধুমাত্র ফ্রিজে মাংস ঢুকাইয়া রাখার জন্য নয়। কুরবানী দেওয়া হচ্ছে আল্লাহতালার সন্তুষ্ট অর্জনের জন্য এবংরাসূল সাল্লামের সকল বিধি নিষেধ মেনে চলার জন্য।
কোরবানির গরুর ভাগের নিয়ম
কোরবানির গরুর ভাগের নিয়ম আমাদের সকলকে সঠিকভাবে পালন করতে হবে যাতে করে আমরা আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি। তাই চেষ্টা করবেন কুরবানীর মাংস তিন ভাগে ভাগ করার যেখানে একভাগ নিজের জন্য রাখুন এবং বাকি দুই ভাগ দান করে রাতের মাধ্যমে আল্লাহতলার সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করুন।
কোরবানির মাংস কয় ভাগে ভাগ করতে হয়
কোরবানির মাংস ৩ ভাগে ভাগ করতে হয়। কুরবানীর গোস্ত তিনভাগের মধ্যে একভাগ নিজের জন্য এবং বাকি দুইভাগ আত্মীয়-স্বজন পাড়া-প্রতিবেশী এবং গরিব মিসকিনদের মধ্যে ভাগ করে দিতে হবে। তাই সঠিক নিয়মে কোরবানি দিন এবং আল্লাহ তালাকে সন্তুষ্ট করুন।
মনে রাখবেন আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য আমরা কুরবানী দিচ্ছি কোন ব্যক্তি স্বার্থে নয় কিংবা কোন মানুষকে খুশি করার জন্য নয়। তাই সবাইকে সমান ভাগে আপনি অবশ্যই নিজের গোশত বিতরণ করবেন এবং কোন ধরনের ব্যক্তি বা সংস্থার প্রতি গোস্ত বিতরণের সুযোগ দিবেন না। কেননা বর্তমান সময়ে সমাজে এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা মূলত এক একটি সংস্থা তৈরি করেছে যেখানে আপনাকে মাংস দিতে বলা হবে এবং তারাই আপনার মাংস গরীবদের মধ্যে বিতরণ করে দিবে।
কিন্তু মনে রাখুন এ সকল সংস্থা আপনার কাছ থেকে জবরদস্তি করে নিজের কোরবানির মাংসগুলো নিয়ে যেতে পারে এবং দাবি করতে পারে তারা সমান ভাগে সকল গরিব মিসকিনদের কাছে মাংস ভাগাভাগি করে দিচ্ছে যাতে করে তারা কোন ধরনের বিভ্রান্তির মধ্যে না পড়ে। আসলে তারা শুধুমাত্র ব্যক্তির স্বার্থে এমন কার্যক্রম করছে। কারণ আল্লাহ তায়ালা বলেছেন আপনাকে নিজেকে দেখে দেখে খুঁজে খুঁজে এমন মানুষদের কুরবানীর গোশত বিতরণ করতে হবে যারা আসলে দুবেলা খেতে পারেনা কিংবা কুরবানীর দিন কুরবানী দিতে পারেনি এবং এই খুশির দিন বঞ্চিত হয়েছে আনন্দ করা থেকে।
এ থেকে অবশ্যই আপনি নিশ্চিত হয়ে গেলেন যে আপনাকে কুরবানির মাংস বিতরণ করতে হবে যাতে করে মানুষজন সেটা ভক্ষণ করতে পারে এবং আপনার জন্য দোয়া করে এবং আল্লাহ তাআলা আপনার প্রতি সন্তুষ্ট হন। সুতরাং আপনাকে এ কথা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে কোন ধরনের মানুষের উপর এইসব দায়িত্ব না দিয়ে নিজে নিজে খুঁজে খুঁজে আপনার পাড়া-প্রতিবেশী বা আত্মীয়-স্বজনদের জন্য আপনার কোরবানির মাংস বিতরণ করা।
আমাদের শেষ কথা
আর্টিকেলটি তৈরি করতে আমরা অনেক মেহনত করেছি এবং বেশ কিছু রিসার্চ করেছি তারপরে এই কনটেন্টটি তৈরি করতে পেরেছি। মূলত ইউটিউব, google এবং বেশ কিছু মাধ্যম থেকে অনেক বড় বড় আলেমদের বর্ণনা অনুযায়ী আমরা এই কন্টেনটি তৈরি করেছি। তাই যদি আপনি এই বিষয়গুলো কিংবা মতামতগুলো ভুল মনে করে থাকেন তাহলে অনায়াসে চাইলে কমেন্ট করতে পারেন। এবং বন্ধুদের সঙ্গে কনটেন্টটি শেয়ার করুন যাতে করে তারাও কোরবানির গরুর ভাগের নিয়ম জেনে নিতে পারে এবং সঠিকভাবে কোরবানির গোশত বন্টন করতে পারে।